| |

লেপ্রসি পূণর্বাসন প্রোগ্রাম

(ক) লেপার্স সাপোর্ট প্রোগ্রামঃ উক্ত এলাকায় এখন ও অনেক কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত পরিবার রয়েছে, পূর্ব থেকেই কেডিএবি তাদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পরিবার গুলোর সার্বিক উন্নয়ন সাধন করে তাদের মানষিক পরিবর্তন করে স্বনির্ভরতা অর্জন করাই হল মূল কাজ। দেখা যায় যারা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত তারা সমাজে খুবই অবহেলিত, সমাজ তাদের সাধারণ দৃষ্টিতে দেখে না ফলে তারা সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তাই নিম্নোক্ত কর্মসূচীর মাধ্যমে কেডিএবি সাপোর্টিং প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে তা হলো-
১.    পূর্ণবাসন কার্যক্রম
২.    প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
৩.    শিক্ষা কার্যক্রম
৪.    স্বাস্থ্য সচেতনতা ও চিকিৎসা কার্যক্রম।

(খ) লেপার্স ইম্প্লইমেন্টঃ সমাজের অবহেলিত স্থানীয় কুষ্ঠরোগী পরিবারের সদস্য যারা মোটামুটি কাজ করতে সক্ষম তাদেরকে প্রকল্পের বিভিন্ন কাজে অন্তর্ভুক্ত করে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করাই এর লক্ষ্য। তাই এসব পরিবার বা ব্যক্তিকে দৈনিক বা মাসিক হিসাবে ভাতা/মজুরী প্রদান করা হয়। যাতে তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ভালভাবে বাঁচতে পারে।

(গ) মেডিক্যাল সাপোর্টঃ প্রয়োজনে কুষ্ঠরোগীদের ও কনান স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ও এলাকার সাধারণ জনগনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।

(ঘ) স্কলারশীপ ফর দি চিলড্রেন অব লেপার্সঃ যে সকল কুষ্ঠ রোগীর পরিবার অত্যন্ত গরীব ও অসহায় তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এ ধরণের স্কলারশীপ প্রদান করা হয়।

(ঙ) উলিপুর কনান প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ কুড়িগ্রাম জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল উলিপুর উপজেলার মালতিবাড়ী দিগর/মিনাবাজার গ্রামে কেডিএবি কর্তৃক নিজস্ব স্থাপনায় এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা অত্যন্ত সুনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে নার্সারী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন। এখানে প্রতি বছর সমাপণী পরীক্ষায় পাশের হার শতকরা ১০০%।

(চ) উলিপুর কনান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ এলাকার প্রয়োজনে একই ভাবে কেডিএবি তার নিজস্ব স্থাপনায় কনান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বর্তমানে এর ছাত্র-ছাত্রী সংখ‌্যা ২৮০ জন বিদ‌্যালয়টি নিম্ন মাধ‌্যমিক ও মাধ‌্যমিক পর্যায়ে সরকার কর্তৃক পাঠদানের অনুমতি রয়েছে। ২০২২ ইং সাল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

(ছ) হোস্টেলঃ গরীব ও অসহায় কুষ্ঠরোগী পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি হোস্টেল পরিচালিত হচ্ছে। তাদের থাকা-খাওয়া ও পড়াশুনা সহ যাবতীয় খরচ প্রকল্প বহন করে থাকে। বর্তমানে এখানে ২০ জন ছাত্র-ছাত্রী বসবাস করছে। পরবর্তিতে প্রকল্প পরিকল্পনা   অনুসারে  তাদের সংখ্যা বাড়বে।

(জ) সেমিনার ওয়ার্কসপঃ বছরের বিভিন্ন সময়ে কুষ্ঠরোগী পরিবার, কুষ্ঠরোগী সমিতি, দর্জি সমিতি ইত্যাদি সুবিধাভোগীদের নিয়ে বছরের বিভিন্ন সময়ে সেমিনার বা ওয়ার্কসপ সম্পাদন করা।

(ঝ) স্পেশাল মেডিক্যাল সার্ভিসঃ নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা প্রদান ছাড়াও বছরের বিভিন্ন সময়ে বিদেশ থেকে আগত বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সমন্বয়ে মেডিক্যাল ক্যাম্প করে বিভিন্ন জটিল রোগের সুচিকিৎসা ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও সার্জনদের সমন্বয়ে মেডিক্যাল ক্যাম্প করে টিউমার, ঠোঁট কাটা, চোখ সহ মহিলাদের যাবতীয় গাইনোকোলজিক্যাল জটিল রোগের অপারেশন ও চিকিৎসা সেবা প্রাদান করা হয়।

(ঞ) কম্পিউটার ট্রেনিংঃ বর্তমান ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কেডিএবি এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রথমবারের মত সু-সজ্জিত একটি কম্পিউটার সেন্টার পরিচালনা করে আসছে। এখানে এলাকার শিক্ষিত যুবক-যুবতী, চাকরীজীবি ও আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।

(ট) সুইং ট্রেনিংঃ এলাকার বেকার ও অবহেলিত মহিলারা যাতে নিজেদের কাজ নিজেরা করা ও তা থেকে আয়ের পথ তৈরী করতে পারে সে জন্য হাতে কলমে সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। যারা এখান থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তারা একটি সমিতি গঠন করে প্রতি মাসে অল্প অল্প সঞ্চয় করে এবং যখন তাদের প্রয়োজন হয় তখন উক্ত সমিতি থেকে বিনা সুদে ঋণ নিয়ে থাকে। তারা এই ঋণ দিয়ে কেউ কেউ সেলাই মেশিন, গরু, ছাগল ইত্যাদি কিনে থাকে আবার কেউ কেউ ছোট খাট ব্যাবসা করেও স্বনির্ভরতা অর্জন করছে।

(ঠ) স্পোর্টস/মিউজিক প্রশিক্ষণঃ শরীর ও মন সুস্থ্য রাখার জন্য নিয়ম শৃংক্ষলার মধ্যে আবদ্ধ থাকা তথা নিজেকে পরিপূর্ন বিকাশের জন্য দেশী / বিদেশী বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা নিয়মিত তেকোন্দ, ফুটবল, ভলিবল, ক্রিকেট, বাস্কেটরল ও সংগীত প্রশিক্ষণ প্রদান করা। এর আওতায় আমাদের স্কুলের ছাত্র- ছাত্রী ও স্টাফরা এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।

(ড) পোল্ট্রি ফার্মঃ স্থানীয় বেকার যুবক ও কৃষকদের হাঁস-মূরগী পালন ও চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে হাতে কলমে শিখানো ও স্ব-নির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে একটি পোল্ট্রি ফার্ম পরিচালিত হয়ে আসছে।

(ঢ) ফিশারি ফার্মঃ এ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য রয়েছে তিনটি পুকুর, এই পুকুরে মাছ চাষের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

(থ) এগ্রিকালচার ডেমান্’ট্রেশানঃ বিভিন্ন রকম উন্নতমানের ফল ও শাক সব্জি যেমন- পেপে, আম, কুল বড়ই, পেয়ারা, নারিকেল ভুট্রা, টমাটো ইত্যাদি সহ চাষাবাদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। তাছাড়াও ধান, গম ইত্যাদি শস্য উৎপান করা হয়। এ সব ফলমূল, শাকসব্জি ও শস্য বাজারজাত করে তার অর্থ প্রকল্পের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

(দ) নার্সারীঃ বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীর আওতায় এখানে রয়েছে একটি নার্সারী যেখানে বিভিন্ন গাছের চারা, কলম ইত্যাদি তৈরী করা হয়। উত্তর বঙ্গেও বালু ভুমিতে তা রোপন কারা হয় এভাবে উক্ত এলাকায় বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে সরকারের গৃহিত বৃক্ষরোপন কর্মসুচীকে সহায়তা করা হয়ে থাকে। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় সহায়ক হবে।

(ধ) ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টঃ সকল স্টাফ, ছাত্র-ছাত্রীর আমাদের অত্যাধুনিক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এর মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি (মিনারেল ওয়াটার) সরবরাহ করা।

(ন) গ্রামীন পশু ডাক্তার চিকিৎসা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমঃ গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের স্বাবলস্বী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য নিদিষ্ট মেয়াদে দেশী/বিদেশী বিশেষজ্ঞ দ্বারা পশু চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে, দক্ষ পশু চিকিৎক হিসাবে তৈরী করা জন্য কেডিএবি এই নতুন কার্যক্রম হতে নিয়েছে। যার মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে সমাজের উন্নয়নে সরকারের “একটি বাড়ি একটি খামার” কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পারে।

(প) ইমারজেন্সিঃ জরুরী অবস্থা হলে প্রয়োজন অনুসারে সার্ভে করে প্রয়োজনীয় রিলিফ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা। আমরা বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় এলাকার দরিদ্র ও সহায় সম্বলহীন জনগণের মধ্যে চাল, ডাল, চিড়া, কম্বল, শীতের কাপড় ইত্যাদি বিতরণ করেছি।